জুলাই ৬, ২০২৫
যুদ্ধ যেন থেমে নেই....... 

এখনো আকাশে জুড়ে  ভেসে বেড়াচ্ছে নজরদারি ড্রোন, চলছে কথার লড়াই। এরপরে এক সাক্ষাৎকারে বিস্ফোরক হুঁশিয়ারি দিলেন ইরানের আইআরজিসির মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী মোঃ নাঈনী।

তিনি বলেন আর একটি হামলা হলে আমাদের প্রতিক্রিয়ায় আর কোন  রেড লাইন থাকবে না। পাল্টা আঘাত হবে চূড়ান্ত ধ্বংসাত্মক। এই কথাগুলোর মধ্যে লুকিয়ে আছে সেই রাগ,সেই  প্রতিশোধ, আর সেই প্রস্তুতি যা মধ্যপ্রাচ্যুকে নতুন করে নাড়িয়ে  দিতে পারে।

কারণ ইরান শুধু কথা বলে না কাজেও দেখায়। সম্প্রতি ইরান ইসরাইল যুদ্ধে ইরানই বাজিমাত করেছে। নাইনী বলছেনএই যুদ্ধ আসলে এক বিরাট ষড়যন্ত্রের ফল। ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্র মিলে ইরানের শাসন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেয়ার পরিকল্পনা করেছিল। তাদের পরিকল্পনা ছিল ইরানের সামরিক কর্মকর্তা ও নেতাদের হত্যা করে ইরানে একটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি  তৈরি করা। দেশের ভিতরে ভাঙ্গন ধরানো এবং শেষ পর্যন্ত ইরানকে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করা।

কিন্তু বাস্তবতা হলো ঠিক উল্টো। ইরান দ্রুত সংগঠিত ও বিস্ময়কর ভাবে পাল্টা আঘাত হানে। এক  প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যুদ্ধের ঠিক মাঝখানে ইরান ছুড়ে দেয় 2000 এর বেশি বালিসটিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন। যার অনেকগুলোই আঘাত হানে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে এবং ইসরাইলের হামলা  ইরানের সামরিক কর্মকর্তা  হত্যা চেষ্টা ব্যর্থ হয়, কারণ ইরানের শৃঙ্খল বদ্ধ নেতৃত্ব তা সামলে দেয় মুহূর্তেই। বরং এই ঘটনার পর ইরানের প্রতিক্রিয়া এতটাই শক্তিশালী ও ভয়ঙ্কর হয় যে ইসরাইল হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে কার বিরুদ্ধে লড়াই করছে।

এদিকে ইরানের অভ্যন্তরে ভয় কিংবা ভাঙ্গনের চিহ্ন ছিল না বরং গোটা ইরান আরো ঐক্যবদ্ধ এবং শৃঙ্খল বদ্ধ হয়ে উঠেছিল। আয়াতুল্লা আলী খামেনির উপদেষ্টা আলি ল্যারিজানি বলেছেন ইসরাইল  ও আমেরিকা ভেবেছিল মাত্র কয়েক দিনে ইরানকে ভেঙে ফেলা যাবে।

কিন্তু তারা ভুলে গিয়েছিল ইরানি জাতির ইতিহাস, সাংস্কৃতি আর মনোবল।  যুদ্ধ তখন চরমে- সেই মুহূর্তে তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতায় শুরু হয় গোপন আলোচনা। ২৩ জুন খবর আসে  ইসরাইলি চায় যুদ্ধ থামাতে।

যুদ্ধ বিরতি হয়েছেও- কিন্তু এ যেন এক ছায়া যুদ্ধ- যার শেষে পর্দা উম্মোচন হলো বাস্তবতায়। ইসরাইল দিশেহারা, ক্লান্ত, পরাজিত কৌশলে ও মন বলেও। অন্যদিকে ইরান শুধু টিকে নেই আরো শক্তিশালী ও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছে।

জেনারেল নাইনিকে প্রশ্ন করা হয় কে আজ ভয় পাচ্ছেন ইরান না তার শত্রুরা – প্রশ্নের উত্তরটা ছিল ভয় তাদের যারা জানে আমাদের প্রতিক্রিয়ার মাত্রা কতটা ভয়াবহ হতে পারে। এই যুদ্ধ যেন শেষ হয়নি তবে ফলাফল স্পষ্ট যেখানে হয়তো অস্ত্র থেমেছে সেখানেই শুরু হয়েছে এখন নতুন এক প্রতিরোধ। ইরান যেন আরো প্রস্তুত, আরও নির্ভীক , শক্তিশালী আরো প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »